ভাজা খাবারের ৫ টি আইটেম

ভাজা খাবারের ৫ টি আইটেম : ভাজা খাবারের এর যত পদ নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে রেনুকা দেবী চৌধুরানী নাম। তিনি তার বই “রকমারি নিরামিষ রান্না” নামক বইতে খুবই চমৎকার করে লিখেছেন –

রেনুকা দেবী চৌধুরানী [ Renuka Dabi Chowdhurani ]
রেনুকা দেবী চৌধুরানী [ Renuka Dabi Chowdhurani ]

ভাজা খাবারের ৫ টি আইটেম

পেঁয়াজ ফুলের বড়া

উপকরণ: পেঁয়াজকলির মাথার ভাল থোকা ফুল, ময়দা, আটা বা বেসন, নুন, হলুদ, সামান্য তেল।

ভাজা খাবারের ৫ টি আইটেম - পেঁয়াজ ফুল, পেঁয়াজের ফুল
পেঁয়াজ ফুল

প্রণালী: টাটকা ভাল পেঁয়াজকলির ওপরের ফোটা ফুল বড় বড় দেখে বেছে নিয়ে, ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখো। ময়দা, আটা বা বেসনে তেলের ময়ান দিয়ে বেশ করে মেখে নুন দাও। ঘন গোলার মতো জল দিয়ে গোলা তৈরি করে ভাল করে ফেটিয়ে রাখো। উনুনে কড়ায় তেল চড়াও। তেল ভাল তাতলে, পেঁয়াজের ফুল এক-একটি করে গোলায় ডুবিয়ে তেলে ছাড়ো। বেশ মচমচে ও গাঢ় বাদামি রঙের ভাজা হলে, এই পেঁয়াজ ফুলের বড়া খিচুড়ির সঙ্গে বেশ ভাল লাগে।

পোস্ত বড়া

উপকরণ: পোস্ত দানা ৫০ গ্রাম, ময়দা, আটা বা আতপ চাল বাটা বড় ১ চামচ থেকে দেড় চামচ, পরিমাণমতো নুন, রুচি মতো লঙ্কাবাটা, তেল।

পোস্ত বড়া [ Posto Bora ]
পোস্ত বড়া [ Posto Bora ]
প্রণালী: পোস্ত আধঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে জল ঢেলে মিহি করে বেটে রাখো। তারপর লঙ্কাবাটা, নুন, আটা, ময়দা বা চালবাটা, পোস্তবাটা দিয়ে বেশ করে মেখে নিয়ে ফেটিয়ে নাও। উনুনে কড়ায় তেল চাপাও। তেল গরম হলে মাখা পোস্তবাটা অল্প করে হাতে নিয়ে ছোট ছোট বড়ার আকারে তেলে ছাড়তে থাকো। এক পিঠ শক্ত হলে সাবধানে উল্টে দাও। খুন্তি দিয়ে উল্টোপাল্টা করে ভাজবে। বাদামি রং ধরলে, আর বেশ মচমচে হলে নামিয়ে পরিবেশন করো। খেতে মুখরোচক।

বকফুলের পাটভাজা (শীতকালের)

উপকরণ: কয়েকটি না-ফোটা বকফুল, একসঙ্গে মিশিয়ে এক ভাগ চালের মিহি গুঁড়ো, এক ভাগ বেসন, এক চিমটি সোডি বাই কার্ব, নুন পরিমাণ মতো, সামান্য হলুদবাটা, পোস্তদানা সামান্য, তেল বেশি, ঝাল পছন্দ হলে একটু লঙ্কাবাটা।

বকফুল [ Sesbania grandiflora ]
বকফুল [ Sesbania grandiflora ]
প্রণালী: ফুল ধুয়ে পিঠের দিক আলগা করে ভেতরের ডাঁটাটা ফেলে দিয়ে, ফুলটির আকার আবার আগের মতো করে রাখো; পোকা বেছে ফেলে দিয়ো। বেসন ও চালের গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে তেলের ময়ান দিয়ে বেশ করে মাখো। ময়ান কিন্তু খুব বেশি বা একেবারে কম হবে না। জল দিয়ে বেশ ঘন করে এই বেসন মেশানো চালের গুঁড়ো মাখো। হলুদবাটা দাও। এক চিমটি সোডি বাই কার্ব ও পরিমাণ মতো নুন দিয়ে বেশ করে ফেনাও। ইচ্ছা হলে সামান্য লঙ্কাবাটা দিয়ো। এই গোলা বেশি ভারী হবে না।

উনুনে কড়ায় বেশি তেল দাও। তেল বেশ তাতলে, এক-একটি ফুল আলাদা করে ডান হাতে গোলায় ডুবিয়ে তুলে বাঁ-হাতে গোলায় ডোবানো ফুলের ওপরে একটু পোস্ত ছড়িয়ে দিয়ে তেলে ছাড়ো। তেলে বেশ ফুলে উঠলে উল্টে দাও। মাঝারি আঁচে গাঢ় বাদামি রঙের করে ভেজে ফেলো। বেশ মচমচে হবে। এইভাবে সব ফুল ভাজো। খেতে মুখরোচক।

বাঁধাকপির ধোঁকা ভাজা

উপকরণ: বাঁধাকপি ২৫০ গ্রাম, ছোলার ডাল ২০০ গ্রাম, আদা ১ ইঞ্চি পরিমাণ, লঙ্কাবাটা ১ চা-চামচ, নুন পরিমাণ মতো, চিনি ১ চা-চামচ, ইচ্ছে হলে কিশমিশ ২৫ গ্রাম, তেল।

বাঁধাকপি, Badhacopy, Cabbage, گوبھی, Brassica Oleracea
বাঁধাকপি, Badhacopy, Cabbage, گوبھی, Brassica Oleracea

প্রণালী: আগের রাতে ছোলার ডাল ভিজিয়ে রেখে, পরের দিন সকালে ডাল ভাল করে ধুয়ে ভেজানো ডাল ভাল করে বেটে নাও। কপি কুচি করে কেটে, অল্প সিদ্ধ করে নাও। ঠাণ্ডা হলে কপির জল চিপে ফেলে দিয়ে, ডালবাটার সঙ্গে ভালভাবে মেখে নাও। এতে নুন, চিনি, আদাবাটা, লঙ্কাবাটা ও কিশমিশ মেশাও। কড়ায় বড় ২ চামচ তেল দাও। তেল তাতলে, ডাল ও বাঁধাকপি মাখা দাও। অল্প কষে থালায় ঢেলে দাও। হাত দিয়ে সবটা সমান করে দিয়ে বরফির আকারে কাটো। কড়ায় তেল দিয়ে, তেল ভাল গরম হলে এই টুকরোগুলো লাল করে ভেজে রাখো। এই ধোঁকা ভাজা গরম গরম চায়ের সঙ্গে খেতে ভাল লাগে। যারা পেঁয়াজ পছন্দ করে তারা পেঁয়াজকুচি কাটা বাঁধাকপির ধোঁকায় মিশিয়ে দিতে পারে।

বাঁধাকপির ভাজা গোল্লা

উপকরণ: মিহি কুচি করা বাঁধাকপি ঠাসা বড় ১ কাপ, কাজু বাদাম ভাঙা / কাপ, বেসন / কাপ, হলুদ / চা-চামচ, কাঁচালঙ্কাকুচি ১ চা-চামচ, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য জল, চিনি ১ চা-চামচ।

প্রণালী: সবগুলো উপকরণ একসঙ্গে মেখে ছোট ছোট গোল গোল করে গোলা তৈরি করো। কড়ায় তেল চড়িয়ে গোলাগুলো অল্প অল্প করে গরম তেলে ছেড়ে বেশ লাল করে ভেজে তোলো। গরম গরম খেতে ভাল।

বাঁধাকপির বড়া (১)

উপকরণ: ছোট ১টি বাঁধাকপির ভেতরের সাদা পাতা কুচোনো, ৫০ গ্রাম ছোলার ডাল, মিহি বাটা, পরিমাণ মতো নুন, হলুদবাটা ১ চা-চামচ, চিনি দেড়-চামচ, লঙ্কাবাটা চা-চামচ, গরম মশলা বাটা ১ চা-চামচ, সরষের তেল।

প্রণালী: কুচোনো বাঁধাকপির পাতা ধুয়ে জল ঝরিয়ে নুন, হলুদ মাখিয়ে ১৫ মিনিট আন্দাজ রেখে চিপে জল ঝরিয়ে রাখো। মিহি ছোলার ডালবাটা ও বাঁধাকপির কুচি সম পরিমাণে নাও। নুন, মিষ্টি, লঙ্কাবাটা ও গরম মশলা বাটা মিশিয়ে গোল-গোল করে রাখো। উনুনে কড়ায় তেল দাও। তেল তাহলে, বড়াগুলো লাল করে ভাজো। চায়ের সঙ্গে খেতে ভাল লাগবে।

বাঁধাকপির বড়া (২)

উপকরণ: মিহি করে কুচোনো বাঁধাকপি ২৫০ গ্রাম, ১ চা-চামচ কাঁচালঙ্কাবাটা, পরিমাণ মতো নুন, কালোজিরে ১ চা-চামচ, বেসন ৫০ গ্রাম, চালের মিহি গুঁড়ো বড় ২ চামচ, তেল।

প্রণালী: বাঁধাকপি কুচোনো নুন মাখিয়ে রাখো। একটু পরে অল্প কচলিয়ে ভাল করে জল চিপে নাও। বেসন আর চালের গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে তেল দিয়ে বেশ ভাল করে ময়ান দিয়ে মাখো। সামান্য নুন দাও (বাঁধাকপিতে নুন দেওয়া, সেই জন্যে আন্দাজ মতো নুন দেবে)। লঙ্কাবাটা, কালোজিরে দাও। অল্প জল দিয়ে কাদা কাদা মতো হলে খুব ভাল করে ফেটাও। খুব ভাল ফেটানো হলে জল-চেপা বাঁধাকপির কুচি দিয়ে মাখো। উনুনে কড়াতে একটু বেশি তেল চড়াও। তেল তাতলে, হাতে করে বেসন-মাথা বাঁধাকপির ছোট-ছোট ডেলা একটু চ্যাপটা-চ্যাপটা আকারে গড়ে নিয়ে গরম তেলে ছাড়ো। যতগুলি দেওয়া যায় দাও। নরম আঁচে ভাজো, বেশ মচমচে আর লাল রং হলে তেল ঝরিয়ে তোলো। খেতে বেশ মুচমুচে, সুন্দর লাগে।

আরও পড়ুন:

আরও পড়ুন:

Leave a Comment