ভাজা খাবারের ৭ টি আইটেম

ভাজা খাবারের ৭ টি আইটেম : ভাজা খাবারের এর যত পদ নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে রেনুক দেবী চৌধুরীর নাম। তিনি তার বই “রকমারি নিরামিষ রান্না” নামক বইতে খুবই চমৎকার করে লিখেছে – কয়েকটি সিদ্ধর কথা লিখছি। এ ছাড়াও অনেক তরকারি পছন্দ মতো সিদ্ধ করে নানারকম ভাবে মেখে মুখরোচক করে খাওয়া যায়।

ভাজা খাবারের ৭ টি আইটেম - Happy little girl with chef hat making noise with the cooking pots and wooden spoons - isolated

ভাজা খাবারের ৭ টি আইটেম

কচুরিপানার ফুলের পাটভাজা

উপকরণ: বেশ ফোটা কচুরি ফুলের থোকা কয়েকটি, ময়দা, কালোজিরে, সামান্য লঙ্কাবাটা, নুন, ভাসা তেলে ভাজবার জন্যে তেল। প্রণালী: ফুলের থোকা তুলে এনে ডাঁটা কেটে ফেলে, জলে ধুয়ে জল ঝরতে দাও। ময়দায় তেলের ময়ান দিয়ে কালোজিরে, পরিমাণ মতো নুন ও ঝালের রুচি অনুযায়ী লঙ্কাবাটা ও জল দিয়ে ফেটিয়ে পাটভাজার গোলা তৈরি করে নাও।

কড়াতে বেশি করে তেল চড়াও। তেল কড়া গরম হলে, ফুলের থোকা এক একটি করে গোলায় চুবিয়ে বাড়তি গোলা একটু ঝেড়ে তেলে ছাড়ো। দেখবে ফুলে ভেসে উঠবে। লাল রং-এর ভাজা হবে এবং বেশ মচমচে হবে। গরম গরম পরিবেশন করো। পূর্ববঙ্গে এই পাটভাজা খাওয়ার বেশ চলন ছিল। খেতে মুখরোচক।

কাঁঠালবিচির বড়া

উপকরণ: পুষ্ট কাঁঠালবিচি কয়েকটি পরিমাণ মতো নুন, সামান্য কালোজিরে, লঙ্কাবাটা, হলুদবাটা, সামান্য ময়দা, ময়দা না হলে আতপ চালের মিহি বাটা গোলা, তেল।

কাঁঠাল বিচি
কাঁঠাল বিচি

প্রণালী: কাঁঠালবিচির ওপরের শক্ত খোসা ফেলে একটু চেঁছে, বিচির ওপরের লাল খোসা যতটুকু পারো ফেলে দাও। একটু নুন ও জল দিয়ে কাঁঠালবিচি সিদ্ধ হলে, উনুন থেকে নামিয়ে জল থেকে তুলে একটি থালায় রাখো। একটু ঠাণ্ডা হলে থালার ওপর এক একটি বিচি হাতের তালুর সামান্য চাপ দিয়ে ফাটা ফাটা করে রাখো। বিচি কিন্তু আস্তই থাকবে। ময়দায় ভাল করে তেলের ময়ান নিয়ে মাখো। নুন, কালোজিরে দাও। ঘন গোলা করার মতো জল দাও। বেশ করে ফেটাও। গোলাও এমন ঘন হবে যে কাঁঠালবিচি গোলায় ডোবালে কাঁঠালবিচির গায়ে গোলা ভালভাবে লাগবে।

উনুনে কড়ায় একটু বেশি তেল দাও। তেল ভাল তাতলে, একটি একটি করে কাঁঠালবিচি গোলায় ডুবিয়ে তেলে ছাড়ো। যতগুলো ধরে তেলে দাও। এপিঠ-ওপিঠ করে উল্টেপাল্টে ভাজো। বাদামি রং হলে নামাও। ওপরটা সুন্দর খাস্তা এবং ভেতরটা বেশ নরম হয়। গরম গরম খুবই উপাদেয়। চালবাটা দিয়ে ভাজলে ওপরটা শক্ত আর বেশ মচমচে হয়।

চালকুমড়োর বুকোর বড়া

উপকরণ: চালকুমড়োর বুকো ৪-৫টি, ময়দা ৫০-৭৫ গ্রাম, কালোজিরে / চা-চামচ, হলুদবাটা বা গুঁড়ো সিকি চা-চামচ, পরিমাণ মতো নুন, একটু বেশি তেল। প্রণালী: কুমড়োর বিচি কিছু শক্ত হয়ে এলে, বিচিসুদ্ধ বুকো কেটে ফেলা হয়। সেই বুকো ৪-৫ টুকরো হাত দিয়ে টিপে বিচি বার করে ফেলে, বুঝোগুলো এক ইঞ্চি, দেড় ইঞ্চি আন্দাজ টুকরো করে কেটে জল টিপে রাখো।

ময়দায় তেলের ময়ান দাও। ময়ান দেওয়া ময়দা মুঠো করে ধরলে ডেলা মতো হবে। ময়ান সেই রকম দিয়ো। এবার কালোজিরে, নুন ও ঘন গোলার আন্দাজে জল দাও। হলুদ দাও। খুব ভাল করে ফেটিয়ে হালকা করো। উনুনে কড়ায় একটু বেশি তেল দাও। তেল তাতলে কুমড়ো এক একটি নিয়ে গোলায় ডুবিয়ে তেলে ছাড়ো। মাঝারি আঁচে উল্টে পাল্টে গাঢ় বাদামি রং করে ভেজে তোলো। বড়ার ওপরটা মচমচে, ভেতরটা রসালো হবে। খেতে খুবই ভাল লাগে।

ডাল আলুর বড়া

উপকরণ: ছোলার ডাল ১২৫ গ্রাম, বড় আলু ৪টি, আদাবাটা বড় ১ চামচ, জিরেবাটা ১ চা-চামচ, ধনেবাটা ১ চা-চামচ, লঙ্কাবাটা মাঝারি ১ চামচ, পেঁয়াজ মাঝারি ১টি মিহিকুচি, সামান্য গরম মশলা গুঁড়ো, পরিমাণ মতো নুন, অল্প চিনি, ভাজবার জন্যে একটু বেশি তেল।

ছোলার ডাল
ছোলার ডাল

প্রণালী: আগের রাতে ছোলার ডাল ভিজিয়ে রাখো। বড় আলু ৪টি ভাল করে সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে রাখো। ডাল পরিষ্কার করে ধুয়ে শিলে মিহি করে বাটো। ডাল বাটা হলে, ভাল করে ফেটিয়ে সিদ্ধ আলু চটকে নাও। আদাবাটা, জিরেবাটা, লঙ্কাবাটা, ধনেবাটা, পেঁয়াজকুচি, গরম মশলার গুঁড়ো, নুন ও চিনি দিয়ে আলু ও ডালবাটা খুব ভাল করে মেখে রাখো। উনুনে কড়ায় বেশি করে তেল চড়াও। তেল ভাল তাতলে, নিজের পছন্দ মতো আকারে বড়া তেলে দিয়ে ভেজে তোলো।

ডাল তিলের বড়া

উপকরণ: মটর বা খেসারি ডাল ১০০ গ্রাম, সাদা তিল ২৫ গ্রাম, কাঁচালঙ্কা ৩-৪টি, পরিমাণ মতো নুন, তেল।

মটর ডাল [ Motor Dal, Split Peas ]
মটর ডাল [ Motor Dal, Split Peas ]

প্রণালী: আগের রাতে ভিজিয়ে, পরের দিন সকালে ডাল পরিষ্কার করে ধুয়ে বেটে নাও। ডালবাটা খুব মিহি করার দরকার নেই। কাঁচালঙ্কা আধবাটা করে ডালে দাও। তিল পরিষ্কার করে ধুয়ে জল থেকে ছেঁকে উঠিয়ে ডালে ফেটিয়ে দাও। এই মেশানো ডাল সামান্য পরিমাণ মতো নুন দিয়ে, হাত দিয়ে প্রায় টাকার আকারে বা সামান্য কিছু বড় গোল-গোল একটু ছোট ধরনের বড়া তৈরি করো। উনুনে কড়ায় তেল চড়াও। তেল ভাল তাতলে, তেলে ছাড়ো। বারে বারে উল্টেপাল্টে অল্প আঁচে লাল ও মচমচে করে ভেজে নামাও। এই বড়া মচমচে এবং খেতে ভালই লাগে।

দালিয়া বা গমের বড়া

উপকরণ: গম বা দালিয়া ২৫০ গ্রাম, কলাই ৫০ গ্রাম, কালোজিরে ১ চামচ, কাঁচালঙ্কা কুচি ৩টি, হিং ছোট মটর দানার পরিমাণ, নুন পরিমাণ মতো, খাবার সোডা (সোডিবাইকার্ব) / চা-চামচ, তেল ১২৫ গ্রাম মতো।

প্রণালী: দালিয়া, গম বা কলাই ভাল জলে ভিজিয়ে দাও। ভাল ভিজলে বেটে নিয়ে বাকি জিনিস মিশিয়ে বেশ করে ফেটিয়ে নাও। উনুনে কড়া চাপিয়ে দাও। তেল গরম হলে কড়ায় ডালের বড়ার মতো বড়া ছাড়ো। লাল করে ভেজে নামাও। এইভাবে সব বড়া ভাজো। ইচ্ছে হলে মিহি পেঁয়াজকুচি বা বাটা, ঝাল পছন্দ করলে লঙ্কাবাটা, দালিয়া ফেটাবার সময় মিশিয়ে দিতে হবে। গরম গরম খেতে ভাল লাগে। দ্রষ্টব্য: পেঁয়াজ দিলে আর হিং দেবার প্রয়োজন নেই।

ঢ্যাঁড়শ ভাজা

উপকরণ: কচি ঢ্যাঁড়শ, পরিমাণ মতো নুন, ভাজবার জন্যে তেল। প্রণালী: ঢ্যাঁড়শ পরিষ্কার করে ধুয়ে নাও। একটু মোটা চাকা না হলে চাকাগুলো আঠায় জোড়া লেগে যাবে। কড়ায় একটু বেশি তেল দাও। তেল গরম হলে নুন মাখিয়ে ট্যাড়শ চাকা ছাড়ো। খুন্তি দিয়ে নেড়ে চেড়ে লাল মচমচে করে ভাজবে। খেতে ভাল লাগে।

আরও পড়ুন:

2 thoughts on “ভাজা খাবারের ৭ টি আইটেম”

Leave a Comment